Odhikar

নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা

২৫ নভেম্বর ২০১৯

প্রেস বিজ্ঞপ্তি

নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা

আজ ২৫ নভেম্বর। নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে আন্তর্জাতিক দিবস। ১৯৯৯ সালে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশন গৃহীত ৫৪/১৩৪ রেজুলেশন অনুযায়ী ২৫ নভেম্বরকে আনুষ্ঠানিকভাবে নারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতা দূরীকরণের জন্য আন্তর্জাতিক দিবস হিসাবে স্বীকৃতি দেয়। এরপর থেকে প্রতি বছর এই তারিখে নারীর প্রতি সহিংসতার বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী জনসচেতনতা বাড়াতে মানবাধিকার কর্মীরা সম্মিলিতভাবে এই দিনটি পালন করে আসছেন। আজ নারীগ্রন্থ প্রবর্তণা কার্যালয়ে এই দিবসটি উপলক্ষে মানবাধিকার সংগঠন অধিকার এবং নারীগ্রন্থ প্রবর্তণা যৌথভাবে এক আলোচনা সভার আয়োজন করে।

নারী ও মেয়েদের বিরুদ্ধে সহিংসতা আজ সারাবিশ্বে অত্যন্ত বিস্তৃত, অটল এবং বিধ্বংসী মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়ে দাঁড়িয়েছে। দায়মুক্তি, লৈঙ্গিক অসমতা এবং সামাজিক চাপের কারণে নারীর প্রতি সহিংসতা অনেকাংশেই অপ্রকাশিত রয়ে গেছে।

উবিনীগ এর পরিচালক সীমা দাস সিমুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন অধিকারের জেন্ডার বিশেষজ্ঞ এবং গবেষণা কর্মকর্তা তাসকিন ফাহমিনা, গৃহশ্রমিক অধিকার উন্নয়ন এর যুগ্ম-সম্পাদক কাজী রেনুয়ারা, সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফেরামের সাধারণ সম্পাদক সম্পা বসু, রেডিমেট গার্মেন্টস্ ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের সভাপতি লাভলী ইয়াসমিন, ইন্টারন্যাশনাল কালচার ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ড. মোতাহারা বানু প্রমুখ।

নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে আন্তর্জাতিক দিবসের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট বর্ণনা করে তাসকিন ফাহমিনা বলেন, জাতিসংঘের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী বিশ্বে প্রতি ৩ জন নারী ও মেয়ের মধ্যে অন্তত একজন তাঁর জীবদ্দশায় শারীরিক বা যৌন সহিংসতার শিকার হন। বিশ্বব্যাপী নারীরা সহিংসতার শিকার হচ্ছেন; এদের মধ্যে রোহিঙ্গা নারীরা ব্যাপক গণধর্ষণের শিকার হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন।বাংলাদেশের নারী ও মেয়ে শিশুরা ধর্ষণ, যৌন হয়রানি, যৌতুক সহিংসতা এবং পারিবারিক সহিংসতাসহ বিভিন্ন ধরনের সহিংসতার শিকার হয়ে আসছেন। নারী ও শিশুদের ওপর বিভিন্ন ধরনের নিপীড়ন ও সহিংসতা চালানো হলেও এই সমস্ত ঘটনার বিচার এবং অপরাধীদের সাজা হওয়ার সংখ্যা খুবই কম। ফলে নারীর প্রতি সহিংসতার ঘটনা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং বিচারহীনতার সংস্কৃতি ও অভিযুক্তদের দায়মুক্তির কারণে সামাজিক শৃঙ্খলা ভেঙ্গে পড়েছে। ধর্ষণের হার মারাত্মকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন,  অধিকারের তথ্য অনুযায়ী ২০০৯ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৯ সালের অক্টোবর পর্যন্ত ৭৮৯৫ জন নারী ও শিশু ধর্ষণের শিকার হন। এদের মধ্যে মেয়ে শিশু ধর্ষণের হার প্রায় দ্বিগুণ। একই সময়ে ৬০১ জন নারী ও মেয়ে শিশু এসিড সহিংসতার শিকার হয়েছেন এবং ৩৫৯৪ জন নারী যৌতুক সহিংসতার শিকার হয়েছেন।

সীমা দাস শিমু বলেন কাশ্মীরের নারীরা বিভিন্নভাবে সহিংসতার শিকার হচ্ছেন প্রতিনিয়ত। এছাড়া গ্রামের মহিলা কৃষকরাও সহিংসতার শিকার হচ্ছেন তাঁদের জমিতে কাজ করতে বাধা প্রদানের মাধ্যমে।

লাভলী ইয়াসমিন বলেন বিদেশে নারীদের পাঠানোর ক্ষেত্রে তাঁদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। এক্ষেত্রে সৌদি আরবে নারী শ্রমিকদের না পাঠিয়ে তুলনামূলক কম সহিংসাপূর্ণ দেশে তাঁদেরকে পাঠানোর সুপারিশ করেন।

সম্পা বসু বলেন, দায়মুক্তির সংস্কৃতি নারীর প্রতি সহিংসতা বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। এছাড়া সাইবার ক্রাইমের মাধ্যমে নারীদের যৌন হেনস্তা করা হচ্ছে। এদেশে নারীর প্রতি সহিংসতার বিচার না হওয়া একটা সংস্কৃতি। নারীদের মর্যাদা ও সমঅধিকার প্রদানের ক্ষেত্রে রাষ্ট্র অনেক পিছিয়ে।

মুক্ত আলোচনায় সৌদি আরব থেকে যৌন নিপীড়নের শিকার হয়ে আসা নারী গৃহশ্রমিক রহিমা বেগম তাঁর ওপর  এবং অন্য নারীদের উপর  সংঘঠিত শারিরীক ও যৌন নির্যাতনের বর্ণনা করেন।

মুক্ত আলোচনায় বক্তারা বলেন, নারীর প্রতি সহিংসতা মানবাধিকারের লঙ্ঘন। নারী এবং মেয়েদের প্রতি সহিংসতার অবসান না হলে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) বাস্তবায়ন বা পূরণ করা কখনোই সম্ভব নয়।

এখানে ক্লিক করলে সম্পূর্ণ প্রতিবেদন বাংলায় দেখতে পাবেন।

Subscribe

Subscribe to our e-mail newsletter to receive updates.

, , ,