Odhikar

প্রেস বিজ্ঞপ্তি: কোটা সংস্কার আন্দোলনঃ অবিলম্বে ছাত্রলীগের দুর্বৃত্তদের গ্রেফতার করুন; কোটা সংস্কার করুন!

৩ জুলাই ২০১৮

গত ৩০শে জুন থেকে আবার নতুন করে শুরু হওয়া সরকারী চাকুরীতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দেলনরত নারীশিক্ষার্থী সহ শিক্ষার্থীদের ওপর আওয়ামী লীগ সমর্থিত ছাত্রলীগের ভয়াবহ হামলা এবং হুমকী, পুলিশ কর্তৃক আন্দোলনকারীদের কর্মসূচী পণ্ড করে দেয়া, আন্দোলনের সাথে জড়িত এক কর্মীকে তুলে নিয়ে গিয়ে গুম করে দেয়া এবং ১ দিন পরে গ্রেফতার দেখানো, অপর একজন আন্দোলনকারীকে গ্রেফতার এবং রিমান্ডে নেবার বিষয়ে অধিকার তীব্র নিন্দা ও উদ্বেগ প্রকাশ করছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসগুলোতে শিক্ষার্থীদের ওপর এই ধরনের বর্বর হামলা ও নিপীড়ন হলেও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এর বিরুদ্ধে কোন ধরণের ব্যবস্থা গ্রহণ না করে বা প্রতিবাদ না জানিয়ে নীরব থাকায় অধিকার এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে।

গত ৩০ জুন থেকে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ওপর ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা পুনরায় হামলা শুরু করে এবং গত ২ জুলাই পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও শহীদ মিনার এবং রাজশাহী, চট্টগ্রাম, জাহাঙ্গীরনগর ও সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্বদ্যালয়ে তারা লাঠিসোটা এবং লোহার রড নিয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালালে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হন। তাদের আক্রমণের হাত থেকে রক্ষা পেতে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের কাছে সাহায্য চাইলে ওই শিক্ষকের ওপরও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা হামলা চালায়। আন্দোলনরত নারী শিক্ষার্থীদের ধর্ষণ এবং পুরুষ শিক্ষার্থীদের গুম করে দেয়ার হুমকি পর্যন্ত দেয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

এছাড়া আন্দোলনের অন্যতম নেতা রাশেদ খানকে পুলিশ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় গ্রেফতার করে এবং আদালত তাঁকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে পাঠায়। বাংলাদেশে পুলিশি হেফাজতে রিমান্ডের নামে নির্যাতন করা হয়। এই আন্দোলনের আরেকজন নেতা ফারুক হোসেনকে গতকাল ছাত্রলীগের আল আমিন সহ কয়েকজন ছাত্রলীগ কর্মী ঢাকার শাহবাগ থেকে তুলে নিয়ে যায়। আল আমিন জানান, ফারুক হোসেনকে তিনি শাহবাগ থানায় দিয়ে এসেছেন। কিন্তু শাহবাগ থানা প্রথমে জানায় তাঁকে গ্রেফতার করা হয়নি- কিন্তু আজ তাঁকে গ্রেফতার দেখানো হয়। ছাত্রলীগের হামলায় আহত আরেক নেতা নুরুল হককে ঢাকার একটি বেসরকারী হাসপাতাল থেকে জোর করে বের করে দেয়া হয়।

অধিকার মনে করে দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকা এবং বিতর্কিত নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করার কারণে জনগণের কাছে কোনো জবাবদিহিতা না থাকায় আওয়ামী লীগ সমর্থিত ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের দুবৃর্ত্তায়ন ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চরম আকার ধারণ করেছে। সারাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আবাসিক হলগুলো আওয়ামী লীগ সমর্থিত ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা নিয়ন্ত্রণ করছে বলে অভিযোগ রয়েছে। তারা হলে থাকা সাধারণ শিক্ষার্থীদের জোর করে তাদের রাজনৈতিক কর্মসূচিতে যোগদান করতে বাধ্য করাসহ তাঁদের ওপর নানা ধরনের নিপীড়ন চালাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য তারা কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়ে তাদের কণ্ঠ স্তব্ধ করে দিতে চাইছে। আজ বিকেলে, কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের গ্রেফতার করায় উদ্বেগ প্রকাশ করে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ করার সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষককে লাঞ্ছিত করে পুলিশ।

অধিকার অবিলম্বে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সাথে জড়িত নেতা কর্মীদের ওপর পুলিশী এবং সরকারী দুর্বৃত্তদের হামলা বন্ধ, নিখোঁজ ছাত্রদের সন্ধান প্রদান এবং বন্দী ছাত্রদের অবিলম্বে মুক্তি দেয়ার দাবী জানাচ্ছে। এছাড়া ছাত্রলীগের যেসব দুর্বৃত্ত নারীসহ আন্দোলনকারীদের ভয়ভীতি প্রদর্শনসহ হামলা করেছে তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।

সংহতি প্রকাশে,
অধিকার টিম
www.odhikar.org

এখানে ক্লিক করলে সম্পূর্ণ প্রতিবেদন বাংলায় দেখতে পাবেন।

Subscribe

Subscribe to our e-mail newsletter to receive updates.