Odhikar

বাংলাদেশ: ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা তদন্ত কর, ভিকটিমদের ক্ষতিপূরণ দাও!

অধিকার এবং ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন ফর হিউম্যান রাইটস (এফআইডিএইচ) এর যৌথ বিবৃতি

ঢাকা/প্যারিস, ১৩ জুলাই ২০২১: বাংলাদেশী কর্তৃপক্ষকে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের বিষয়ে তাৎক্ষণিক, নিখুঁত এবং নিরপেক্ষ তদন্ত করে তদন্তের ফলাফল জনসমক্ষে প্রকাশ করতে হবে এবং এই ঘটনায় জড়িত সকল ব্যক্তির বিচার করার জন্য অধিকার এবং এফআইডিএইচ আজ আহবান জানিয়েছে।

গত ৮ জুলাই ২০২১ নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে সজিব গ্রুপের হাসেম ফুডস আ্যন্ড বেভারেজ কারখানায় এক ভায়বহ অগ্নিকাণ্ডে ৫২ জন শ্রমিক নিহত এবং অর্ধশত শ্রমিক আহত হন। এছাড়া ৫০ জন শ্রমিক নিখোঁজ রয়েছেন বলে জানা গেছে। হতাহত শ্রমিকদের অধিকাংশ ছিলেন নারী ও শিশু। ভবনের ভিতরে অবস্থিত গোডাউন নিয়মবহির্ভূতভাবে গড়ে তোলা হয়েছিল এবং ভবনে অগ্নিনির্বাপনের কোনো ব্যবস্থাই ছিল না। উপরন্তু জরুরী নির্গমনের পথ বন্ধ ছিল এবং অগ্নিকাণ্ডের সময় ভবনের গেট বন্ধ করে রাখা হয়েছিল। ফলে শ্রমিকরা বের হতে না পেরে সেখানে আটকা পড়েন। অগ্নিকাণ্ডে বিধ্বস্ত ভবনটি ইমারত কোড না মেনে অপরিকল্পিতভাবে নির্মাণ করা হয়েছিল।

অগ্নিকাণ্ডের পরে বিভিন্ন তথ্য প্রকাশিত হয় যে কারখানায় শ্রম অধিকারের লঙ্ঘনসহ শ্রমিকদের বেতন এবং ওভারটাইমের মজুরী সময়মত পরিশোধ করা হতো না এবং ১২-১৩ বছর বয়সী শিশুদেরও এই কারখানায় নিযুক্ত করা হয়েছিল যা বাংলাদেশ শ্রম আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন।

অগ্নিকাণ্ডের দিন শ্রমিকরা বিক্ষোভ করলে এবং নিখোঁজ শ্রমিকদের খোঁজ করতে তাঁদের স্বজনরা জড়ো হলে পুলিশ তাঁদের ধাওয়া করে। এই সময় উভয়ের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধলে পুলিশ কাঁদানো গ্যাস ও রাবার বুলেট ছোঁড়ে। এতে শ্রমিকদের স্বজনসহ অনেকইে আহত হন।

এই ধরনের ঘটনা এবং মানবাধিকার লঙ্ঘন রোধ করার লক্ষ্যে আইনগত এবং নীতিগত কাঠামো থাকা সত্ত্বেও কারখানাগুলোর তৈরির ক্ষেত্রে অনিয়ম ও ত্রুটি এবং কারখানা পরিদর্শন পরিচালনা সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থাগুলোর মধ্যে ব্যাপক দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার ফলে তা মারাত্বক আকার ধারণ করেছে। অগ্নিকাণ্ডের সময় কারখানাগুলোতে বহির্গমন পথ বন্ধ থাকা, অগ্নিনির্বাপক সরঞ্জামের অভাব এবং বিভিন্ন ধরনের অবহেলার কারণে কারখানায় বহু শ্রমিক নিহত ও আহত হয়েছেন। উল্লেখ্য, ২০১২ সালে তাজরিন ফ্যাশনস্, ২০১৩ সালে স্মার্ট গার্মেন্টস্, ২০১৬ সালে টাম্পাকো ফয়েলস ও ২০১৯ সালে পুরানো ঢাকায় কেমিক্যাল গোডাউনে এই ধরনের ঘটনা ঘটে। এই হতাহতের সঙ্গে জড়িতদের অধিকাংশের কোন বিচার হয়নি এবং ভিকটিম/পরিবারের অধিকাংশই ক্ষতিপূরণ পাননি। এছাড়াও কারখানাগুলোতে শিশু শ্রমিক দিয়ে কাজ করার প্রবনতা রয়েছে এবং কোভিড-১৯ মহামারির কারণে ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক দুরবস্থার পরিস্থিতিতে শিশু শ্রম আরো বৃদ্ধি পেয়েছে।

অধিকার ও এফআইডিএইচ সজিব গ্রুপের হাসেম ফুডস আ্যন্ড বেভারেজ কারখানায় অগ্নিকাণ্ডে নিহত, আহত ও নিখোঁজ শ্রমিকদের সঠিক তালিকা প্রকাশ করে ভিক্টিম/তাঁদের পরিবারদের ক্ষতিপূরণ দেবার ও পুনর্বাসনের দাবি জানাচ্ছে। এই দুই সংস্থা বাংলাদেশী কর্তৃপক্ষকে ভবিষ্যতে অনুরূপ ঘটনা রোধে দ্রুত এবং কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছে।

এখানে  ক্লিক করলে সম্পূর্ণ প্রতিবেদন বাংলায় দেখতে পাবেন।

Subscribe

Subscribe to our e-mail newsletter to receive updates.